বাংলাদেশের একমাত্র নৈসর্গিক জলপ্রপাত হলাে সিলেট জেলার এ মাধবকুণ্ড

****মাধবকুণ্ড : দেশের আন্তর্জাতিক মানের একটি পর্যটন স্পট হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনার নিদর্শন হচ্ছে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত । বাংলাদেশের একমাত্র নৈসর্গিক জলপ্রপাত হলাে সিলেট জেলার এ মাধবকুণ্ড । যুগ যুগ ধরে এ পাহাড়ী জলকন্যা সৌন্দর্য পিপাসু পর্যটকদের কাছে টেনেছে অকত্রিমভাবে , অথচ বর্তমানে চরম অবহেলার দরুণ ধীরে ধীরে শীর্ণ হচ্ছে এর জলস্রোত সঙ্কুচিত হচ্ছে পাহাড়ি আবরণ , আর বদলে যাচ্ছে নৈসর্গিক পটভূমি । মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত শুধু যে পর্যটকদের আকর্ষণীয় স্থান তাই নয় , হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে এটি তীর্থস্থানও । তবে কবে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত মানুষের নজর কাড়ে তা বলা মুশকিল । পাথারিয়া পাহাড়ের বুক চিরে বেরিয়ে আসা ঝরনাধারায় জলপতনের গুরুগম্ভীর শব্দ হয়তাে এক সময় কেবল বুনাে প্রাণীদের কাছেই পরিচিত ছিল । এলাকাটিও ছিল বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য । লােকশ্রুতিতে শােনা যায় , এককালে সেখানে বুনাে হাতি , গণ্ডার , বাঁদর , ভালুক এসব প্রাণী ছিল প্রচুর । সুদূর দিল্লী - কলকাতা থেকে গণ্ডর শিকারে আসতেন রাজ - রাজারা । কথিত আছে রাজা গৌড় গােবিন্দের বংশীয় শ্রীহট্ট রাজা গঙ্গাধ্বজ ওরফে গােবর্ধন পাথারিয়া পাহাড়ে এসেছিলেন শিকার করতে । পাহাড়ে একটি বিশ্রামাগার স্থাপনের ইচ্ছা হলাে তার । তখন মাটি খুঁড়তে গিয়ে উপবিষ্ট পাওয়া গেল ধ্যানরত এক সন্ন্যাসীকে । রাজা এ সন্ন্যাসীর পদসেবা ও স্মৃতি বন্দনা করতে থাকেন । সন্ন্যাসী রাজাকে বিভিন্ন উপদেশ দিয়ে বলেন , মধুকা ত্রয়ােদশীয় তিথিতে তাকে কুণ্ডে বিসর্জন দিতে । রাজা তাই করলেন । এ সময় পরপর তিনবার মাধব , মাধব , মাধব ধ্বনি উচ্চারিত হলাে । আর সেই থেকেই এর নাম মাধবকুণ্ড । তারপর অনেক সন্ন্যাসী এখানে এসেছেন । তারা নানা - আচার - উপচার পালন করেছেন । এখন প্রতিবছর চৈত্রের মধুকৃষ্ণা ত্রয়ােদশীতে বারুণী স্নান করতে আসেন শত শত পুণ্যার্থী । তখন বিরাট বারুণী মেলাও বসে কুণ্ড প্রাঙ্গণে । এখানে একটি শিবমন্দির ও মাধবমন্দির রয়েছে । বিশেষ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এটিকে দর্শন করে যায় ।
Reactions

Post a Comment

0 Comments