যাট গম্বুজ মসজিদ


***যাট গম্বুজ মসজিদ ; বাগেরহাটের খান জাহান আলীর মাজার হতে প্রায় ২ . ১৪ কিলােমিটার উত্তর - পশ্চিমে ঘােড়াদীঘির পূর্ব তীরে ষাট গম্বুজ মসজিদ অবস্থিত । এটি মহান সাধক খান জাহান আলী কর্তৃক নির্মিত । গঠন প্রণালী ও স্থাপত্যকৌশলে এটি একটি অনন্য সৃষ্টি । বাংলাদেশের মুঘল আমলের মসজিদগুলাের মধ্যে এটি বৃহত্তম । বার উইয়াদের অন্যতম ঈশা খাঁর শাসনামলে সােনারগার গৌরব ও ঐতিহ্য ছিল । কিন্তু কালের স্রোতে বিভিন্ন উত্থান - পতনের ফলে সােনারগার সে গৌরবময় অতীতের কোনাে চিহ্নই এখন দেখা যায় না । সােনারগাঁয়ের প্রাচীন রাজধানীর বদলে এখন সেখানে কতগুলাে গ্রমই চোখে পড়ে । ধ্বংস চিহ্নের মধ্যে বিরাট দীঘি , মাটির স্কুপ ও কেল্লা দেখা যায় । মুঘল আমলের পূর্বেও এখানে বাংলাদেশের মুসলমান শাসকদের রাজধানী ছিল । পরে গৌড় এবং পাণ্ডুয়াতে রাজধানী স্থানান্তরিত হওয়ায় সােনারগাঁয়ের গৌরব ম্লান হয়ে যায় । অতীতের অসংখ্য ইমারতের অস্তিত্ব সােনারগায়ের সর্বত্র বিদ্যমান , বিশেষ করে পানাম এলাকায় দেখতে পাওয়া যায় । এখান থেকেই শেরশাহের বিখ্যাত গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রােড আরম্ভ হয় । এখানে গিয়াসউদ্দীন আজম শাহের কবর এবং পাঁচ পীরের মাজার আছে । বর্তমানে সােনারগাঁয়ে একটি লােকশিল্প জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে । যার নাম ‘ শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন জাদুঘর । এবং চারকোণে ৪টি মােট ৮১টি গম্বুজ সত্ত্বেও এ মসজিদকে কেন ৬০ গম্বুজ মসজিদ বলা হয় তার কোনাে কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি । অনেকের অনুমান মসজিদের অভ্যন্তরে ৬০টি স্তম্ভ আছে বলে মসজিদটির নাম ষাট গম্বুজ মসজিদ । আবার অন্যদের মতে , মসজিদের উপর সাত সারি গম্বুজ আছে বলে সাত থেকে ষাট গম্বুজ নামকরণ হয়েছে । মসজিদের বাইরে এক বিরাট এলাকা জুড়ে একটি বেষ্টনী প্রাচীর ছিল । এর পূর্বদিকে প্রধান প্রবেশ তােরণ ছিল । তােরণের দু ' পাশে দুটি কক্ষ ও বেষ্টনী প্রাচীর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে । শুধু প্রবেশ তােরণটি টিকে আছে । এ মসজিদটি খান জাহান আলী তার দরবার কক্ষ হিসেবে ব্যবহার করতেন বলে জনশ্রুতি আছে ।
Reactions

Post a Comment

0 Comments