রামাদান রমজান মাসের ফজিলত সম্পর্কে জানতে হবে আর মেনে চলতে হবে

"আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু" 


****রামাদান রমজান মাসের ফজিল****

 রমজান মাসের আগমনে মুসলিমগণ আনন্দ প্রকাশ করে থাকেন। আনন্দ প্রকাশ করাই স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ততা। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন : বল, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়ায়। সুতরাং এতে তারা আনন্দিত হোক। তারা যা সঞ্চয় করে এটা তার চেয়ে উত্তম। [সূরা ইউনুস : ৫৮] পার্থিব কোন সম্পদের সাথে আল্লাহর এ অনুগ্রহের তুলনা চলে না, তা হবে এক ধরনের অবাস্তব কল্পনা। যখন রমজানের আগমন হত তখন রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অতিশয় আনন্দিত হতেন, তার সাহাবাদের বলতেন : তোমাদের দ্বারে বরকতময় মাস রমজান এসেছে। এরপর তিনি এ মাসের কিছু ফজিলত বর্ণনা করে বলতেন : আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য সিয়াম পালন ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দ্বারসমূহ খুলে দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। অভিশপ্ত শয়তানকে বন্দি করা হয়। এ মাসে রয়েছে একটি রাত যা হাজার রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যে ব্যক্তি এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো সে মূলত সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হল। [ বর্ণনায় : নাসায়ী ] https://onlinegreentree.blogspot.com আমাদের কর্তব্য : আল্লাহর এ অনুগ্রহের মূল্যায়ন করতে চেষ্টা করা, এ মাসের ফজিলত ও তাৎপর্য অনুধাবনে সচেষ্ট হওয়া ও ইবাদত-বন্দেগিসহ সকল কল্যাণকর কাজে নিয়োজিত থাকা। এ মাসের যে সকল ফজিলত রয়েছে তা হল : এক. এ মাসের সাথে ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রুকনের সম্পর্ক রয়েছে ; আর তা হলে সিয়াম পালন। হজ যেমন জিলহজ মাসের সাথে সম্পর্কিত হওয়ার কারণে সে মাসের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে এমনি সিয়াম রমজান মাসে হওয়ার কারণে এ মাসের মর্যাদা বেড়ে গেছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন : হে মোমিনগণ! তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমনি ফরজ করা হয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর-যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার। [সূরা বাকারা : ১৮৩] রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ইসলাম যে পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত তার একটি হল সিয়াম পালন। এ সিয়াম জান্নাত লাভের একটি মাধ্যম ; যেমনহাদিসে এসেছে : যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনল, সালাত কায়েম করল, জাকাত আদায় করল, সিয়াম পালন করল রমজান মাসে, আল্লাহ তাআলার কর্তব্য হল তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো। [ বোখারি ] https://onlinegreentree.blogspot.com **** রমজান হল কোরআন নাজিলের মাস। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন : রমজান মাস, এতে নাজিল হয়েছে আল-কোরআন, যা মানুষের দিশারি এবং স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী। [ সূরা বাকারা : ১৮৪ ] রমজান মাসে সপ্তম আকাশের লওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আকাশে বায়তুল ইজ্জতে পবিত্র আল-কোরআন একবারে নাজিল হয়েছে। সেখান হতে আবার রমজান মাসে অল্প অল্প করে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি নাজিল হতে শুরু করে। কোরআন নাজিলের দুটি স্তরই রমজান মাসকে ধন্য করেছে। শুধু আল-কোরআনই নয় বরং ইবরাহিম আ.-এর সহিফা, তাওরাত, যবুর, ইঞ্জিল সহ সকল ঐশী গ্রন্থ এ মাসে অবতীর্ণ হয়েছে বলে তাবরানী বর্ণিত একটি সহি হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে। (সহি আল-জামে) এ মাসে মানুষের হেদায়াত ও আলোকবর্তিকা যেমন নাজিল হয়েছে তেমনি আল্লাহর রহমত হিসেবে এসেছে সিয়াম। তাই এ দুই নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে বেশি বেশি করে কোরআন তিলাওয়াত করা উচিত। প্রতি বছর রমজান মাসে জিবরাইল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে পূর্ণ কোরআন শোনাতেন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ও তাকে পূর্ণ কোরআন শোনাতেন। আর জীবনের শেষ রমজানে আল্লাহর রাসূল দু বার পূর্ণ কোরআন তিলাওয়াত করেছেন। সহি মুসলিমের হাদিস দ্বারা এটা প্রমাণিত। **** রমজান মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয় ও জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয় শয়তানদের।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামবলেছেন : যখন রমজান মাসের আগমন ঘটে তখন জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানদের আবদ্ধ করা হয়। অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে-শয়তানের শিকল পড়ানো হয়। [ মুসলিম ] https://onlinegreentree.blogspot.com তাই শয়তান রমজানের পূর্বে যে সকল স্থানে অবাধে বিচরণ করত রমজান মাস আসার ফলে সে সকল স্থানে যেতে পারে না। শয়তানের তৎপরতা দুর্বল হয়ে যায়। ফলে দেখা যায় ব্যাপকভাবে মানুষ তওবা, ধর্মপরায়ণতা, ও সৎকর্মের দিকে অগ্রসর হয় ও পাপাচার থেকে দূরে থাকে। তারপরও কিছু মানুষ অসৎ ও অন্যায় কাজ-কর্মে তৎপর থাকে। কারণ, শয়তানের কু-প্রভাবে তারা অনেক বেশি প্রভাবিত হয়ে পড়েছে। **** রমজান মাসে রয়েছে লাইলাতুল কদর।আল্লাহ তাআলা বলেন : লাইলাতুল কদর সহস্র মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিই শান্তি, সে রজনি উষার আবির্ভাব পর্যন্ত। [সূরা আল-কদর : ৩-৫] https://onlinegreentree.blogspot.com রমজান মাস দোয়া কবুলের মাস।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামবলেন : রমজান মাসে প্রত্যেক মুসলিমের দোয়া কবুল করা হয়। [ মুসনাদ আহমদ ] অন্য হাদিসে এসেছে : আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রমজানের প্রতি রাতে ও দিনে বহু মানুষকে মুক্তি দিয়ে থাকেন এবং প্রতি রাত ও দিবসে মুসলিমের দোয়া-প্রার্থনা কবুল করা হয়। [ সহি আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব ] তাই প্রত্যেক মুসলমান এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজের কল্যাণের জন্য যেমন দোয়া-প্রার্থনা করবে, তেমনি সকল মুসলিমের কল্যাণ, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জ্ঞাপন করবে। ***রমজান পাপ থেকে ক্ষমা লাভের মাস। যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়েও তার পাপসমূহ ক্ষমা করানো থেকে বঞ্চিত হলো আল্লাহর রাসূল তাকে ধিক্কার দিয়েছেন। তিনি বলেছেন : ঐ ব্যক্তির নাক ধুলায় ধূসরিত হোক যার কাছে রমজান মাস এসে চলে গেল অথচ তার পাপগুলো ক্ষমা করা হয়নি। [ তিরমিজি ] সত্যিই সে প্রকৃত পক্ষে সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত যে এ মাসেও আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত রয়ে গেল। https://onlinegreentree.blogspot.com ****রমজান জাহান্নাম থেকে মুক্তির লাভের মাস, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : রমজান মাসের প্রথম রজনির যখন আগমন ঘটে তখন শয়তান ও অসৎ জিনগুলোকে বন্দি করা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়, এ মাসে আর তা খোলা হয় না। জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, এ মাসে তা আর বন্ধ করা হয় না। প্রত্যেক রাতে একজন ঘোষণাকারী এ বলে ঘোষণা দিতে থাকে যে, হে সৎকর্মের অনুসন্ধানকারী তুমি অগ্রসর হও ! হে অসৎ কাজের অনুসন্ধানকারী তুমি থেমে যাও ! এ মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ তাআলা জাহান্নাম থেকে বহু মানুষকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। [ তিরমিজি ] https://onlinegreentree.blogspot.com *** রমজান মাসে সৎকর্মের প্রতিদান বহু গুণে বৃদ্ধি করে দেয়া হয়। যেমন হাদিসে এসেছে যে, রমজান মাসে ওমরাহ করলে একটি হজের সওয়াব পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, বরং, রমজান মাসে ওমরাহ করা আল্লাহর রাসূলের সাথে হজ আদায়ের মর্যাদা রাখে। এমনিভাবে সকল ইবাদত-বন্দেগিসহ সকল সৎকাজের প্রতিদান কয়েক গুণ বেশি দেয়া হয়। https://onlinegreentree.blogspot.com **** রমজান ধৈর্য ও সবরের মাস। এ মাসে ঈমানদার ব্যক্তিগণ খাওয়া-দাওয়া, বিবাহ-শাদি ও অন্যান্য সকল আচার-আচরণে যে ধৈর্য ও সবরের এত অধিক অনুশীলন করেন তা অন্য কোন মাসে বা অন্য কোন পর্বে করেন না। এমনিভাবে সিয়াম পালন করে যে ধৈর্যের প্রমাণ দেয়া হয় তা অন্য কোন ইবাদতে পাওয়া যায় না। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন : ধৈর্যশীলদের তো বিনা হিসাবে পুরস্কার দেয়া হবে।[সূরা যুমার : ১০] রমজান মাসের আগমনে মুসলিমগণ আনন্দ প্রকাশ করে থাকেন। আনন্দ প্রকাশ করাই স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ততা। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন : বল, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়ায়। সুতরাং এতে তারা আনন্দিত হোক। তারা যা সঞ্চয় করে এটা তার চেয়ে উত্তম। [সূরা ইউনুস : ৫৮] পার্থিব কোন সম্পদের সাথে আল্লাহর এ অনুগ্রহের তুলনা চলে না, তা হবে এক ধরনের অবাস্তব কল্পনা। যখন রমজানের আগমন হত তখন রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অতিশয় আনন্দিত হতেন, তার সাহাবাদের বলতেন : তোমাদের দ্বারে বরকতময় মাস রমজান এসেছে। এরপর তিনি এ মাসের কিছু ফজিলত বর্ণনা করে বলতেন : আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য সিয়াম পালন ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দ্বারসমূহ খুলে দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। অভিশপ্ত শয়তানকে বন্দি করা হয়। এ মাসে রয়েছে একটি রাত যা হাজার রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যে ব্যক্তি এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো সে মূলত সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হল। [ বর্ণনায় : নাসায়ী ] আমাদের কর্তব্য : আল্লাহর এ অনুগ্রহের মূল্যায়ন করতে চেষ্টা করা, এ মাসের ফজিলত ও তাৎপর্য অনুধাবনে সচেষ্ট হওয়া ও ইবাদত-বন্দেগিসহ সকল কল্যাণকর কাজে নিয়োজিত থাকা। এ মাসের যে সকল ফজিলত রয়েছে তা হল : এক. এ মাসের সাথে ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রুকনের সম্পর্ক রয়েছে ; আর তা হলে সিয়াম পালন। হজ যেমন জিলহজ মাসের সাথে সম্পর্কিত হওয়ার কারণে সে মাসের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে এমনি সিয়াম রমজান মাসে হওয়ার কারণে এ মাসের মর্যাদা বেড়ে গেছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন : হে মোমিনগণ! তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমনি ফরজ করা হয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর-যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার। [সূরা বাকারা : ১৮৩] রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ইসলাম যে পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত তার একটি হল সিয়াম পালন। এ সিয়াম জান্নাত লাভের একটি মাধ্যম ; যেমন হাদিসে এসেছে : যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনল, সালাত কায়েম করল, জাকাত আদায় করল, সিয়াম পালন করল রমজান মাসে, আল্লাহ তাআলার কর্তব্য হল তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো। [ বোখারি ] https://onlinegreentree.blogspot.com *** রমজান হল কোরআন নাজিলের মাস। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন : রমজান মাস, এতে নাজিল হয়েছে আল-কোরআন, যা মানুষের দিশারি এবং স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী। [ সূরা বাকারা : ১৮৪ ] রমজান মাসে সপ্তম আকাশের লওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আকাশে বায়তুল ইজ্জতে পবিত্র আল-কোরআন একবারে নাজিল হয়েছে। সেখান হতে আবার রমজান মাসে অল্প অল্প করে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি নাজিল হতে শুরু করে। কোরআন নাজিলের দুটি স্তরই রমজান মাসকে ধন্য করেছে। শুধু আল-কোরআনই নয় বরং ইবরাহিম আ.-এর সহিফা, তাওরাত, যবুর, ইঞ্জিল সহ সকল ঐশী গ্রন্থ এ মাসে অবতীর্ণ হয়েছে বলে তাবরানী বর্ণিত একটি সহি হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে। (সহি আল-জামে) এ মাসে মানুষের হেদায়াত ও আলোকবর্তিকা যেমন নাজিল হয়েছে তেমনি আল্লাহর রহমত হিসেবে এসেছে সিয়াম। তাই এ দুই নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে বেশি বেশি করে কোরআন তিলাওয়াত করা উচিত। প্রতি বছর রমজান মাসে জিবরাইল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে পূর্ণ কোরআন শোনাতেন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ও তাকে পূর্ণ কোরআন শোনাতেন। আর জীবনের শেষ রমজানে আল্লাহর রাসূল দু বার পূর্ণ কোরআন তিলাওয়াত করেছেন। সহি মুসলিমের হাদিস দ্বারা এটা প্রমাণিত। https://onlinegreentree.blogspot.com *** রমজান মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয় ও জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয় শয়তানদের। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : যখন রমজান মাসের আগমন ঘটে তখন জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানদের আবদ্ধ করা হয়। অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে-শয়তানের শিকল পড়ানো হয়। [ মুসলিম ] তাই শয়তান রমজানের পূর্বে যে সকল স্থানে অবাধে বিচরণ করত রমজান মাস আসার ফলে সে সকল স্থানে যেতে পারে না। শয়তানের তৎপরতা দুর্বল হয়ে যায়। ফলে দেখা যায় ব্যাপকভাবে মানুষ তওবা, ধর্মপরায়ণতা, ও সৎকর্মের দিকে অগ্রসর হয় ও পাপাচার থেকে দূরে থাকে। তারপরও কিছু মানুষ অসৎ ও অন্যায় কাজ-কর্মে তৎপর থাকে। কারণ, শয়তানের কু-প্রভাবে তারা অনেক বেশি প্রভাবিত হয়ে পড়েছে। https://onlinegreentree.blogspot.com ***" রমজান মাসে রয়েছে লাইলাতুল কদর। আল্লাহ তাআলা বলেন : লাইলাতুল কদর সহস্র মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিই শান্তি, সে রজনি উষার আবির্ভাব পর্যন্ত। [সূরা আল-কদর : ৩-৫] https://onlinegreentree.blogspot.com *** রমজান মাস দোয়া কবুলের মাস। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : রমজান মাসে প্রত্যেক মুসলিমের দোয়া কবুল করা হয়। [ মুসনাদ আহমদ ] অন্য হাদিসে এসেছে : আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রমজানের প্রতি রাতে ও দিনে বহু মানুষকে মুক্তি দিয়ে থাকেন এবং প্রতি রাত ও দিবসে মুসলিমের দোয়া-প্রার্থনা কবুল করা হয়। [ সহি আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব ] তাই প্রত্যেক মুসলমান এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজের কল্যাণের জন্য যেমন দোয়া-প্রার্থনা করবে, তেমনি সকল মুসলিমের কল্যাণ, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জ্ঞাপন করবে। https://onlinegreentree.blogspot.com **** রমজান পাপ থেকে ক্ষমা লাভের মাস। যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়েও তার পাপসমূহ ক্ষমা করানো থেকে বঞ্চিত হলো আল্লাহর রাসূল তাকে ধিক্কার দিয়েছেন। তিনি বলেছেন : ঐ ব্যক্তির নাক ধুলায় ধূসরিত হোক যার কাছে রমজান মাস এসে চলে গেল অথচ তার পাপগুলো ক্ষমা করা হয়নি। [ তিরমিজি ] সত্যিই সে প্রকৃত পক্ষে সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত যে এ মাসেও আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত রয়ে গেল। https://onlinegreentree.blogspot.com **** রমজান জাহান্নাম থেকে মুক্তির লাভের মাস, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : রমজান মাসের প্রথম রজনির যখন আগমন ঘটে তখন শয়তান ও অসৎ জিনগুলোকে বন্দি করা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়, এ মাসে আর তা খোলা হয় না। জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, এ মাসে তা আর বন্ধ করা হয় না। প্রত্যেক রাতে একজন ঘোষণাকারী এ বলে ঘোষণা দিতে থাকে যে, হে সৎকর্মের অনুসন্ধানকারী তুমি অগ্রসর হও ! হে অসৎ কাজের অনুসন্ধানকারী তুমি থেমে যাও ! এ মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ তাআলা জাহান্নাম থেকে বহু মানুষকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। [ তিরমিজি ] https://onlinegreentree.blogspot.com *****. রমজান মাসে সৎকর্মের প্রতিদান বহু গুণে বৃদ্ধি করে দেয়া হয়। যেমন হাদিসে এসেছে যে, রমজান মাসে ওমরাহ করলে একটি হজের সওয়াব পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, বরং, রমজান মাসে ওমরাহ করা আল্লাহর রাসূলের সাথে হজ আদায়ের মর্যাদা রাখে। এমনিভাবে সকল ইবাদত-বন্দেগিসহ সকল সৎকাজের প্রতিদান কয়েক গুণ বেশি দেয়া হয়। https://onlinegreentree.blogspot.com **"**. রমজান ধৈর্য ও সবরের মাস। এ মাসে ঈমানদার ব্যক্তিগণ খাওয়া-দাওয়া, বিবাহ-শাদি ও অন্যান্য সকল আচার-আচরণে যে ধৈর্য ও সবরের এত অধিক অনুশীলন করেন তা অন্য কোন মাসে বা অন্য কোন পর্বে করেন না। এমনিভাবে সিয়াম পালন করে যে ধৈর্যের প্রমাণ দেয়া হয় তা অন্য কোন ইবাদতে পাওয়া যায় না। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন : ধৈর্যশীলদের তো বিনা হিসাবে পুরস্কার দেয়া হবে। [সূরা যুমার : ১০] https://onlinegreentree.blogspot.com মুসলমানদের কাছে আরবী বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তার মধ্যে রমজান মাসকে কোরআনের বসন্ত কাল বলা হয়, কারণ এ মাসেই কোরআন নাযিল হয়েছে এবং হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেয়তর রাত্রি শবে কদর এ মাসেই বিদ্যমান এবং সর্বোপরি রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস পবিত্র রমজান। এই মাস আত্মশুদ্ধির মাস এবং মহান আল্লাহর নৈকট্য অর্জনসহ সারা জীবনের জন্য পাথেয় ও পরকালের সম্বল অর্জনের মাস। পবিত্র রমজানের প্রেমময় এই মহাসাগরে ভ্রমণ এবং এই মহাসাগরের মনি-মুক্তা ও অন্য সব দামী সম্পদ আহরণের জন্য যোগ্যতা অর্জন জরুরি। ইহলোক ও পরলোক মিলে যে অসীম জীবন- রমজানেই তার পাথেয় সংগ্রহ করে নেয়ার এমন মহাসুযোগকে যাতে যথাযথভাবে কাজে লাগানো যায় সে জন্য জরুরি জ্ঞান ও সচেতনতা অর্জনে মহান আল্লাহর কাছেই তৌফিক কামনা করছি। রমজান শব্দটি রমজ থেকে এসেছে যার অর্থ দাহন। মানব জীবনে কুপ্রবৃত্তির বিনাশ বা দাহন জরুরি। আর এর ফলেই মানব সমাজে সংহতি, প্রেম ও একতা সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে কুপ্রবৃত্তিগুলো মানুষকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন ও অসহায় করে মানব জীবনকে অন্ধকারের অতল তলে তলিয়ে দেয় এবং মানব জীবনের মহৎ উদ্দেশ্য সাধনকে অসম্ভব করে তুলে। কামপ্রবৃত্তির অসংযত চর্চা মানুষকে পশুত্বের স্তরে নামিয়ে দেয়। ক্রোধ মানুষকে করে জ্ঞানশূন্য। লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য সামাজিক জীবনে বিশৃঙ্খলা বয়ে আনে। এসবের চর্চা মানুষের আত্মাকে করে কলুষিত ও আত্মিক উন্নতিকে করে ব্যাহত। সোনা যেমন আগুনে পুড়ে খাঁটি হয় তেমনি রোজাও কুপ্রবৃত্তিগুলোকে পুড়িয়ে মানুষকে করে খাঁটি মানুষ। ফলে সে হতে পারে আল্লাহর প্রতিনিধি এবং মহান আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার যোগ্য বান্দা। আর আত্মিক উন্নতির মাধ্যমে সে পেতে পারে মহান আল্লাহর সাক্ষাত বা নৈকট্য। আর এসব কারণেই এ মাসকে বলা হয় রমজান মাস। https://onlinegreentree.blogspot.com রোজা বা সওম-এর অর্থ হল কোনো কিছু থেকে বিরত থাকা বা সংযম সাধনা। কুরআনের সুরা বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াতে সিয়াম (সওমের বহুবচন) সম্পর্কে বলা হয়েছে: 'হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা খোদাভীতি বা তাকওয়া অর্জন করতে পার।' (২:১৮৩) পরের দুই আয়াতে এসেছে: ১৮৪. নির্দিষ্ট সংখ্যক দিনের (এক মাসের) জন্য রোজা ফরজ। অতএব এ সময় তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ বা সফরে থাকলে, তাকে অন্য সময়ে (মাসে) ঐ সংখ্যা পূরণ করে নিতে হবে। আর যাদের জন্য রোজা অত্যন্ত কষ্ট দায়ক, তারা এক দিনের পরিবর্তে একজন মিস্‌কীনকে খাদ্যদান করবে। তবে যে কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আরো বেশি সৎকর্ম করবে তার জন্য আরো কল্যাণকর। অতএব কোন অযুহাত না দেখিয়ে যদি রোজা রাখ, তবে তোমাদের জন্য অধিক কল্যাণকর, যদি তোমরা বুঝতে পারতে। ১৮৫. রমযান মাসই হল সে মাস, মানুষের হেদায়েতের জন্য যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন। আর তা হেদায়েতের সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ এবং ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, তাকে এ মাসের রোযা রাখতে হবে। কিন্তু যে লোক অসুস্থ কিংবা সফরে থাকবে সে অন্য মাসে ঐ সংখ্যা পূরণ করবে। কারণ আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য (তাঁর বিধান) সহজ করতে চান, কঠিন করতে চান না যাতে তোমরা রোজার নির্দিষ্ট সংখ্যা পূরণ করতে পার এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ্‌ তা’য়ালার মহত্ত্ব ঘোষণায় সচেষ্ট থাকতে পার। আর আশা করা যায় তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করবে। সুরা বাকারার ১৮৭ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ রোজা প্রসঙ্গে আরও বলেছেন: 'রোজার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ জানেন যে, তোমরা আত্নপ্রতারণা করছিলে, সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। অতঃপর তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর এবং যা কিছু তোমাদের জন্য আল্লাহ দান করেছেন, তা আহরণ কর। আর (রাজার মাতে) পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রোজা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত। আর যতক্ষণ তোমরা এতেকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মেলা-মেশা করবেনা। এই হলো আল্লাহর বেঁধে দেয়া সীমানা। অতএব, এর কাছেও যেয়ো না। এমনিভাবে বর্ণনা করেন আল্লাহ নিজের নিদর্শনগুলো মানুষের জন্য, যাতে তারা বাঁচতে পারে।' https://onlinegreentree.blogspot.com রমজান মূলতঃ খোদা প্রেমের মাস, যারা আল্লাহকে ভালবাসবে তারা মানুষকেও ভাল বাসবে। তাই রমজানের আরেকটি দর্শন হল: গরীব-মিসকিনের ক্ষূদার্থ অবস্থা অনুধাবন করা। যারা রোযা থাকে, তারা ক্ষূদার্থ ব্যক্তির ক্ষূদার্থ অবস্থা খুব ভালভাবে অনুধাবন করে। রমজানের শেষ দশকের ফজিলত ও তাৎপর্য পুরো রমজান মাসের অসংখ্য ফজিলত থাক সত্বেও রমজানের শেষ দশকের বিশেষ ফজিলত রয়েছে এবং আছে বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য। এগুলো হল : *****এ দশ দিনের মাঝে রয়েছে লাইলাতুল কদর নামের একটি রাত। যা হাজার মাস থেকেও শ্রেষ্ঠ। যে এ রাতে ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে ইবাদত-বন্দেগি করবে তার অতীতের পাপগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে। ****নবী করিম (সাঃ) এ রাতে ইবাদত-বন্দেগিতে বেশি সময় ও শ্রম দিতেন, যা অন্য কোন রাতে দেখা যেত না। যেমন মুসলিম শরীফে আয়েশা (রাঃ) বর্ণিত হাদিসে এসেছে যে, তিনি এ রাতে কোরআন তিলাওয়াত, জিকির, সালাত ও দোয়ার মাধ্যমে জাগ্রত থাকতেন এরপর সেহরি গ্রহণ করতেন। https://onlinegreentree.blogspot.com ***রমজানের শেষ দশক আসলে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) পরনের লুঙ্গি শক্ত করে নিতেন। রাত্রি জাগরণ করতেন এবং পরিবারের সকলকে জাগিয়ে দিতেন। যেমন বোখারি ও মুসলিমে আয়েশা (রাঃ) বর্ণিত হাদিসে এসেছে। তিনি এ দশদিনের রাতে মোটেই নিদ্রা যেতেন না। পরিবারের সকলকে তিনি এ রাতে ইবাদত-বন্দেগি করার জন্য জাগিয়ে দিতেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) লুঙ্গি শক্ত করে নিতেন’ কথাটির অর্থ হল তিনি এ দিনগুলোতে স্ত্রীদের থেকে আলাদা হয়ে যেতেন। https://onlinegreentree.blogspot.com ****এ দশদিনের একটি বৈশিষ্ট্য হল, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এ শেষ দশদিনে মসজিদে এতেকাফ করতেন। প্রয়োজন ব্যতীত তিনি মসজিদ থেকে বের হতেন না। লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ রাতকে সকল রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দিয়েছেন। তিনি তার কালামে এ রাতকে প্রশংসার সাথে উল্লেখ করেছেন। তিনি তাঁর কালাম সম্পর্কে বলতে যেয়ে এরশাদ করেন :— إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُبَارَكَةٍ إِنَّا كُنَّا مُنْذِرِينَ ﴿৩﴾ فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ ﴿৪﴾. ‘আমি তো ইহা অবতীর্ণ করেছি এক বরকতময় রজনিতে। আমি তো সতর্ককারী। এ রজনিতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরকৃত হয়।’ সূরা আদ-দুখান : ৩-৪ বরকতময় রজনি হল লাইলাতুল কদর। আল্লাহ তাআলা একে বরকতময় বলে অভিহিত করেছেন। কারণ এ রাতে রয়েছে যেমন বরকত তেমনি কল্যাণ ও তাৎপর্য। বরকতের প্রধান কারণ হল এ রাতে আল-কোরআন নাজিল হয়েছে। এ রাতে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়-সিদ্ধান্ত লওহে মাহফুজ থেকে ফেরেশতাদের হাতে অর্পণ করা হয় বাস্তবায়নের জন্য। এ রাতের অপর একটি বৈশিষ্ট্য হল আল্লাহ তাআলা এ রাত সম্পর্কে একটি পূর্ণ সূরা অবতীর্ণ করেছেন। যা কিয়ামত পর্যন্ত পঠিত হতে থাকবে। যার নাম ‚ সূরা আল-কদর“। এ সুরাতে যে সকল বিষয় জানা গেল তা হল: https://onlinegreentree.blogspot.com ***"এ রাত এমন এক রজনি যাতে মানবজাতির হেদায়াতের আলোকবর্তিকা মহা গ্রন্থ আল-কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। ****এ রজনি হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। অর্থাৎ তিরাশি বছরের চেয়েও এর মূল্য বেশি। **** এ রাতে ফেরেশতাগণ রহমত, বরকত ও কল্যাণ নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করে থাকে। ****এ রজনি শান্তির রজনি। আল্লাহর বান্দারা এ রাতে জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে শান্তি অর্জন করে থাকে। **** সময়ের প্রতি গুরুত্ব দেয়া। এ আয়াতগুলোতে অল্প সময়ে বেশি কাজ করার জন্য উৎসাহ প্রদান করা হল। যত সময় বেশি তত বেশি কাজ করতে হবে। সময় নষ্ট করা চলবে না। **** গুনাহ ও পাপ থেকে ক্ষমা লাভ। এ রাতের এই ফজিলত সম্পর্কে বোখারি ও মুসলিম বর্ণিত হাদিসে এসেছে— https://onlinegreentree.blogspot.com লাইলাতুল কদর কখন ? আল-কোরআনে নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি লাইলাতুল কদর কোন রাত। তবে কুরআনের ভাষ্য হল লাইলাতুল কদর রমজান মাসে। কিয়ামত পর্যন্ত রমজান মাসে লাইলাতুল কদর অব্যাহত থাকবে এবং এ রজনি রমজানের শেষ দশকে হবে বলে সহি হাদিসে এসেছে। শিয়া-সুন্নি উভয় বর্ণনায় তা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে হাদিসে এসেছে। আহলে সুন্নতের বর্ণনা এরূপ: ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর অন্বেষণ কর।’ বর্ণনায়: বোখারি এবং রমজানের শেষ সাত দিনে লাইলাতুল কদর থাকার সম্ভাবনা অধিকতর। যেমন হাদিসে এসেছে ‘যে লাইলাতুল কদর অন্বেষণ করতে চায় সে যেন শেষ সাত দিনে অন্বেষণ করে।’ বর্ণনায় : বোখারি ও মুসলিম এতদসত্বেও আহলে সুন্নতের আলেমগণ অধিকতর সম্ভাবনার দিক দিয়ে রমজান মাসের সাতাশ তারিখকে ঘটা করে পালন করে সারারাত জেগে থেকে এবাদত করার জোড়ালো যুক্তি তুলে ধরেন। তাই দেখা যায় যে, সাধারণ মানুষ এই একটি রাতকেই শবে কদর হিসেবে মনে করে সারা রাত জেগে থেকে এবাদক করার চেষ্টা করেন। কিন্তু শিয়া মাযহাবের মতে শবে কদর এক রাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তার ফজিলত অর্জন করার জন্য শেষ দশকে সেই খুঁজে বের করতে হবে। তার জন্য রাত জেগে এবাদতের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে ১৯, ২১ ও ২৩ এর রাতকে শবে কদর হিসেবে পরিগণিত করে থাকে কারণ তাদের ইমামদের কাছ থেকে এই তিন রাতের কথা অধিক গুরুত্বের সাথে বর্ণিত হয়েছে। https://onlinegreentree.blogspot.com এক শিয়া আলেম ও পন্ডিত শহীদ মুতাহহারির মতে, শবে কদরের তিনটি ধাপ যা ১৯, ২১ ও ২৩ এর রাতের মাধ্যমে পূর্নতা পায় (শহীদ মুতাহহারি রচিত আত্মার পবিত্রতা)। তাই তারা এই তিন রাতকেই ঘটা করে পালন করে সারা রাত জেগে এবাদত করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। এতেকাফ রমজানের শেষ দশকের বিশেষ ফজিলতসমূহের মধ্যে অন্যতম সুন্নত এবাদত হল: এতেকাফ যার অর্থ সকল কাজ থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর ইবাদতের জন্য মসজিদে অবস্থান করা। এতেকাফের উদ্দেশ্য: মানুষের ঝামেলা থেকে দূরে থেকে আল্লাহ তাআলার ইবাদতে একাগ্রচিত্তে নিয়োজিত হওয়া। এ লক্ষ্যে কোন জামে মসজিদে অবস্থান করে আল্লাহর তরফ থেকে সওয়াব ও লাইলাতুল কদর লাভ করার আশা করা। এতেকাফকারীর কর্তব্য হল অনর্থক কথা ও কাজ পরিহার করে সালাত, কোরআন তিলাওয়াত, জিকির-আজকার, ইস্তিগফার, দোয়া ইত্যাদি ইবাদত-বন্দেগিতে লিপ্ত থাকা। তবে পরিবার পরিজন বা অন্য কারো সাথে অতিপ্রয়োজনীয় কথা বলতে দোষ নেই। এতেকাফকারী নিজ অন্তরকে সর্বদা আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত রাখতে চেষ্টা করবে। নিজের অবস্থার দিকে খেয়াল করবে। আল্লাহর আদেশ-নিষেধ পালনের ব্যাপারে নিজের অলসতা ও অবহেলা করার কথা মনে করবে। নিজের পাপাচার সত্ত্বেও আল্লাহ যে কত নেয়ামত দিয়েছেন তা স্মরণ করে তার প্রতি কৃতজ্ঞ হবে। গভীরভাবে আল্লাহর কালাম অধ্যয়ন করবে। খাওয়া-দাওয়া, নিদ্রা ও গল্প গুজব কমিয়ে দেবে। কেননা এ সকল কাজ-কর্ম আল্লাহর স্মরণ থেকে অন্তরকে ফিরিয়ে রাখে। অনেকে এতেকাফকে অত্যধিক খাওয়া-দাওয়া ও সাথিদের সাথে গল্প-গুজব করে সময় কাটানোর সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন। এতে এতেকাফের ক্ষতি হয় না বটে তবে আল্লাহর রাসূলের এতেকাফ ছিল অন্য রকম। এতেকাফ অবস্থায় স্ত্রী সহবাস, চুম্বন, স্পর্শ নিষেধ। যেমন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন : وَلَا تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنْتُمْ عَاكِفُ ‘তোমরা মসজিদে এতেকাফরত অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে মিলিত হবে না।’ সূরা আল-বাকারা : ১৮৭ শরীরের কিছু অংশ যদি মসজিদ থেকে বের করা হয় তাতে দোষ নেই। নবী করিম (সাঃ) এতেকাফ অবস্থায় নিজ মাথা মসজিদ থেকে বের করতেন। এতেকাফ অবস্থায় মসজিদ থেকে বের হওয়া তিন ধরনের হতে পারে:— **** মানবীয় প্রয়োজনে বের হওয়ার অনুমতি আছে। যেমন পায়খানা, প্রস্রাবের জন্য, খাওয়া-দাওয়ার জন্য, পবিত্রতা অর্জনের জন্য। তবে শর্ত হল এ সকল বিষয় যদি মসজিদের গণ্ডির মাঝে সেরে নেয়া যায় তবে মসজিদ থেকে বের হওয়া যাবে না। ****এমন সকল নেক আমল বা ইবাদত-বন্দেগির জন্য বের হওয়া যাবে না যা তার জন্য অপরিহার্য নয়। যেমন রোগীর সেবা করা, জানাজাতে অংশ নেয়া ইত্যাদি। ****. এমন সকল কাজের জন্য মসজিদ থেকে বের হওয়া যাবে না যা এতেকাফের বিরোধী। যেমন ক্রয়-বিক্রয়, চাষাবাদ ইত্যাদি। এতেকাফ অবস্থায় এ সকল কাজের জন্য মসজিদ থেকে বের হলে এতেকাফ বাতিল হয়ে যায়। ফেতরা প্রদান রমজান মাসের আরেকটি বিশেষ হুকুম হল ফেতরা প্রদান। সারা রমজান মাস রোজা থাকার পর ঈদের চাঁদ দেখা যাবার পর থেকে ঈদের নামায পড়ার আগ পর্যন্ত ফেতরা প্রদান করতে হয়। ফেতরার পরিমান: নবী স. এর সুন্নত হল: দুই ছা, অর্থাৎ সোয়া তিন কেজির সমতুল্য চাল, গম, খেজুর, কিশমিশ, .. ইত্যাদির সমমূল্য অর্থের পুরোটাই ফেতরা পাবার উপযুক্ত ব্যক্তিকে প্রদান করতে হবে। আহকাম: যার উপর যাকাত ফরজ তার উপর ফেতরা ফরজ বা ওয়াজিব। অন্যদের উপর ফেতরা প্রদান করা মুস্তাহাব। আর যারা যাকাত পাবার উপযুক্ত তারাই ফেতরা নিতে পারেবে। তবে নব বংশের সন্তানদের জন্য যাকাত/ফেতরা গ্রহন করা হারাম।

Reactions

Post a Comment

0 Comments